হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলেই খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই ফিলিস্তিনের রাজধানীর নাম কি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে ফিলিস্তিনের রাজধানীর নাম কি সম্পর্কে বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক।
ফিলিস্তিনের রাজধানীর নাম কি
ফিলিস্তিনের রাজধানীর নাম জেরুসালেম। জেরুসালেম শহরটি মধ্যপ্রাচ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক শহর। এটি ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম ধর্মের জন্য একটি পবিত্র স্থান।
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের নির্বাসিত সরকার জেরুসালেমকে তাদের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে, ইসরায়েল রাষ্ট্র জেরুসালেমকে তার রাজধানী হিসেবে দাবি করে। এই দ্বন্দ্বের কারণে জেরুসালেম শহরটি এখনো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি রাজধানী নয়।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের শাসনে থাকা পশ্চিম তীর অঞ্চলে রামallah শহরটিকে ফিলিস্তিনের অস্থায়ী রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কে?
ফিলিস্তিনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হলেন মোহাম্মদ শিতায়হে। তিনি একজন ফিলিস্তিনি রাজনীতিবিদ এবং অর্থনীতিবিদ। তিনি ১৯৫৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর উত্তর পশ্চিম ফিলিস্তিনের নাবলুস শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আল-নাবলুস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
মোহাম্মদ শিতায়হে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন।
তিনি একজন সফল রাজনীতিবিদ এবং অর্থনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। তিনি ফিলিস্তিনের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
মোহাম্মদ শিতায়হে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রধান রাজনৈতিক দল ফাতাহের একজন সদস্য।
ফিলিস্তিনের প্রধান ধর্ম কি?
ফিলিস্তিনের প্রধান ধর্ম হল ইসলাম। ফিলিস্তিনি জনসংখ্যার প্রায় ৮০% মুসলমান। মুসলমানদের মধ্যে বেশিরভাগই সুন্নি, তবে শিয়া মুসলমানদের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যাও রয়েছে।
ফিলিস্তিন ইসলামের জন্মস্থান হিসাবে বিবেচিত হয়। ইসলামের নবী মুহাম্মদ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে ফিলিস্তিনের মদিনায় ইসলাম প্রচার করেছিলেন।
ফিলিস্তিনের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম হল খ্রিস্টান। ফিলিস্তিনি জনসংখ্যার প্রায় ১০% খ্রিস্টান। খ্রিস্টানদের মধ্যে বেশিরভাগই রোমান ক্যাথলিক, তবে অরথোডক্স খ্রিস্টান এবং প্রোটেস্ট্যান্টদের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যাও রয়েছে।
ফিলিস্তিনের তৃতীয় বৃহত্তম ধর্ম হল ইহুদি ধর্ম। ফিলিস্তিনি জনসংখ্যার প্রায় ৫% ইহুদি। ইহুদিদের মধ্যে বেশিরভাগই ইসরায়েল থেকে আসা অভিবাসী।
ফিলিস্তিন একটি বৈচিত্র্যময় ধর্মীয় সম্প্রদায়ের আবাসস্থল। ইসলাম, খ্রিস্টান এবং ইহুদি ধর্ম ছাড়াও, ফিলিস্তনে অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীরও একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ এশীয় ধর্ম, আফ্রিকান ধর্ম এবং আদিবাসী ফিলিস্তিনি ধর্ম।
ফিলিস্তিনি জনসংখ্যা কত 2023?
ফিলিস্তিনি জনসংখ্যা 2023 সালে 7.503 মিলিয়ন ছিল। এর মধ্যে 6.223 মিলিয়ন ফিলিস্তিনি গাজা উপত্যকায় এবং পশ্চিম তীর অঞ্চলে বাস করে। 1.28 মিলিয়ন ফিলিস্তিনি ইসরায়েলে বসবাস করে, যার মধ্যে প্রায় 750,000 ইসরায়েলের নাগরিক এবং প্রায় 530,000 ইসরায়েলের নাগরিক নয়।
ফিলিস্তিনি জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর প্রায় 2.5% হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল উচ্চ জন্মহার।
ফিলিস্তিনি জনসংখ্যার গড় বয়স প্রায় 20 বছর। এটি একটি তরুণ জনসংখ্যা, যার অর্থ হল ভবিষ্যতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি জনসংখ্যার মধ্যে ধর্মীয় বৈচিত্র্য রয়েছে। প্রায় 80% ফিলিস্তিনি মুসলমান, 10% খ্রিস্টান এবং 5% ইহুদি।
ফিলিস্তিনি জনসংখ্যার মধ্যে ভাষাগত বৈচিত্র্যও রয়েছে। প্রায় 90% ফিলিস্তিনি আরবি ভাষায় কথা বলে। অন্যান্য ভাষাগুলির মধ্যে রয়েছে ইংরেজি, ফরাসি এবং হিব্রু।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় নাম কি
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় নাম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র। এটি আরবিতে دولة فلسطين (দাউলাত্ ফিলাস্তীন্) নামে পরিচিত।
ফিলিস্তিন ১৯৮৮ সালে আলজিয়ার্স শহরে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশন (পিএলও) ও প্যালেস্টাইন জাতীয় পরিষদ (পিএনসি) দ্বারা একপাক্ষিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। তবে, ফিলিস্তিন এখনও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি রাষ্ট্র নয়।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের নির্বাসিত সরকার জেরুসালেমকে তাদের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে, ইসরায়েল রাষ্ট্র জেরুসালেমকে তার রাজধানী হিসেবে দাবি করে। এই দ্বন্দ্বের কারণে জেরুসালেম শহরটি এখনো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি রাজধানী নয়।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের শাসনে থাকা পশ্চিম তীর অঞ্চলে রামallah শহরটিকে ফিলিস্তিনের অস্থায়ী রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ফিলিস্তিন কোথায় অবস্থিত
ফিলিস্তিন মধ্যপ্রাচ্যের দক্ষিণাংশের একটি ভূখণ্ড, যা ভূমধ্যসাগর ও জর্ডান নদীর মাঝে অবস্থিত। এই ভূখণ্ডটি বর্তমানে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনী ভূখণ্ড দ্বারা বিভক্ত।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দুটি প্রধান অংশ হল:
- গাজা উপত্যকা: এটি ভূমধ্যসাগরের পূর্বে অবস্থিত, উত্তরে ইসরায়েল এবং দক্ষিণে মিশর দ্বারা বেষ্টিত।
- পশ্চিম তীর: এটি জর্ডান নদীর পশ্চিমে অবস্থিত, উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিমে ইসরায়েল এবং দক্ষিণে জর্ডান দ্বারা বেষ্টিত।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিকৃত এলাকাগুলির মোট আয়তন প্রায় ২৭,০০০ বর্গকিলোমিটার। তবে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার আয়তন প্রায় ৫,৮০০ বর্গকিলোমিটার।
ফিলিস্তিনের মুদ্রার নাম কি
ফিলিস্তিনের ইতিহাস একটি দীর্ঘ ও জটিল ইতিহাস। এই ভূখণ্ডটি প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন জাতি ও সংস্কৃতির আবাসস্থল ছিল। ফিলিস্তিনের ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলির মধ্যে রয়েছে:
- ব্রোঞ্জ যুগ: এই যুগে, ফিলিস্তিন অঞ্চলে কেনানীয়রা বসবাস করত। কেনানীয়রা একটি সমৃদ্ধ সভ্যতা গড়ে তুলেছিল, যা মিশর, মেসোপটেমিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলের সাথে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল।
- লোহিত যুগ: এই যুগে, ফিলিস্তিন অঞ্চল বিভিন্ন শক্তির অধীনে আসে, যার মধ্যে রয়েছে মিশর, ব্যাবিলনীয়, পারস্য, গ্রীক ও রোমান।
- খ্রিস্টীয় যুগ: এই যুগে, ফিলিস্তিন অঞ্চল খ্রিস্টধর্মের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। জেরুজালেম শহর খ্রিস্টানদের জন্য একটি পবিত্র স্থানে পরিণত হয়।
- ইসলামিক যুগ: এই যুগে, ফিলিস্তিন অঞ্চল ইসলামের অধীনে আসে। জেরুজালেম শহর মুসলমানদের জন্য একটি পবিত্র স্থানে পরিণত হয়।
- আধুনিক যুগ: এই যুগে, ফিলিস্তিন অঞ্চল ব্রিটিশ ম্যানডেটের অধীনে আসে। ম্যানডেটের শেষে, ফিলিস্তিন অঞ্চল দুটি রাষ্ট্রে বিভক্ত হওয়ার কথা ছিল, একটি ইহুদি রাষ্ট্র এবং একটি আরব রাষ্ট্র। কিন্তু, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৪৮ সালে, ইহুদিরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে, যা ইসরায়েল নামে পরিচিত। আরব দেশগুলি এই প্রতিষ্ঠাকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এই যুদ্ধে, ইসরায়েল জয়লাভ করে এবং ফিলিস্তিনের বেশিরভাগ অংশ দখল করে।
বর্তমানে, ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড দুটি প্রধান অংশে বিভক্ত: পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা। পশ্চিম তীর ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন, তবে ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষ (পিএনসি) এর আংশিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। গাজা উপত্যকা হামাস-নিয়ন্ত্রিত একটি স্ব-শাসিত অঞ্চল।
ফিলিস্তিনের ইতিহাস একটি সংঘাতের ইতিহাস। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলছে একটি রাজনৈতিক ও সামরিক সংঘাত। এই সংঘাতের সমাধান খুঁজে বের করা একটি কঠিন কাজ, কারণ এর সাথে জড়িত বিভিন্ন জাতি ও সংস্কৃতির স্বার্থ জড়িত।
উপসংহার
আমি আশা করছি আপনারা আপনাদের ফিলিস্তিনের রাজধানীর নাম কি এই প্রশ্নের উওর পেয়েছেন। আরো কিছু জানার থাকলে নিচে কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।