হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলেই খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই ফজরের নামাজের শেষ সময় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে ফজরের নামাজের শেষ সময় সম্পর্কে বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক।
ফজরের নামাজের শেষ সময়
ফজরের নামাজের শেষ সময় হলো সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত। সুবহে সাদিক হলো ভোরের আলোর প্রথম প্রভা। এই আলোকে ‘প্রভাত’ বা ‘ইশারাত’ও বলা হয়।
ফজরের নামাজের শেষ সময়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো:
- ফজরের নামাজের শেষ সময় সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত।
- সুবহে সাদিকের আলো দেখা গেলে ফজরের নামাজ পড়া মাকরুহ অনুত্তম।
- সুবহে সাদিকের সময় মুখমণ্ডল আকাশের দিকে তুললে সুবহে সাদিকের আলো দেখা যায়।
সুতরাং, ফজরের নামাজের শেষ সময় নির্ধারণের জন্য সুবহে সাদিকের আলো দেখার প্রয়োজন। সুবহে সাদিকের আলো দেখা গেলে ফজরের নামাজ পড়া মাকরুহ অনুত্তম।
আসরের নামাজের সময়
আসরের নামাজের সময় হলো দুপুরের সূর্য মাথার উপর থেকে সরে গিয়ে পশ্চিমে ঢলে পড়ার পর থেকে সূর্য বিবর্ণ হয়ে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত।
আসরের নামাজের সময়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো:
- আসরের নামাজের সময় দুপুরের সূর্য মাথার উপর থেকে সরে গিয়ে পশ্চিমে ঢলে পড়ার পর থেকে।
- সূর্য বিবর্ণ হয়ে গেলে আসরের নামাজের সময় শেষ হয়ে যায়।
- আসরের নামাজের সময় সূর্যগ্রহণের সময়ও।
আসরের নামাজের পর মাগরিবের নামাজের সময় শুরু হয়।
আসরের নামাজের সময় নির্ধারণের জন্য সূর্যের অবস্থান বিবেচনা করা হয়। দুপুরের সূর্য মাথার উপর থেকে সরে গিয়ে পশ্চিমে ঢলে পড়ার পর থেকে সূর্য বিবর্ণ হয়ে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আসরের নামাজের সময়।
আসরের নামাজের সময়ের কিছু মাকরুহ সময় রয়েছে। এই সময়গুলোতে আসরের নামাজ পড়া মাকরুহ। মাকরুহ সময়গুলো হলো:
- সূর্য মধ্য আকাশে থাকা অবস্থায়।
- সূর্য পশ্চিমে ঢলে পড়ার পর থেকে সূর্য বিবর্ণ হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।
সুতরাং, আসরের নামাজের সময় সূর্যের অবস্থান বিবেচনা করে নির্ধারণ করতে হবে।
যোহরের নামাজ কয় রাকাত
যোহরের নামাজ চার রাকাত সুন্নাত, চার রাকাত ফরজ ও এরপর দুই রাকাত সুন্নাত নিয়ে গঠিত। কেউ কেউ পরে দুই রাকআত নফল নামাজও আদায় করে। ফর্য অংশ ইমামের নেতৃত্বে জামাআতের সাথে আদায় করা হয়। তবে ব্যক্তি মুসাফির অবস্থায় থাকলে চার রাকাত ফর্য্কে সংক্ষিপ্ত করে দুই রাকাআত করতে পারে ও সুন্নাত আদায় নাও করতে পারে।
সুতরাং, মোট যোহরের নামাজের রাকাআত সংখ্যা হলো ১২। তবে, যোহরের নামাজের ফরজ অংশ ৪ রাকাত আবশ্যক। অন্যগুলো ঐচ্ছিক।
যোহরের নামাজের সময় হলো সূর্য মাথার উপর থেকে সরে গিয়ে পশ্চিমে ঢলে পড়ার পর থেকে সূর্য বিবর্ণ হয়ে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত।
যোহরের নামাজের ফরজ অংশের পর দুই রাকাত সুন্নাহ নামাজ পড়া মুস্তাহাব। এই সুন্নাহ নামাজকে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বলা হয়। অর্থাৎ, এটি পড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যোহরের নামাজের পর দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া উত্তম। এই নফল নামাজকে বিতর নামাজ বলা হয়।
যোহরের নামাজের নিয়ত:
নিয়ত করছি আল্লাহর পক্ষ থেকে যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার।
উচ্চারণ:
নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাকাআতি ফাজরি ফারযি মুতাওয়াক্কিলান বিল্লাহি তা’আলা।
দুই সিজদার মাঝের দোয়া
দুই সিজদার মাঝের দোয়াটি হলো:
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِي وَعَافِنِي وَارْزُقْنِي
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাগ ফিরলি, ওয়ার হামনি, ওয়াহদিনি, ওয়ারজুকনি
অর্থ:
হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করো, দয়া করো, হেদায়েত দাও, আমাকে সুস্থ রাখো এবং আমাকে রিজিক দাও।
এই দোয়াটি রাসূলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত পড়তেন। এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ দোয়া। এই দোয়াটি পড়লে আল্লাহ তা’আলা বান্দার সকল গুনাহ মাফ করে দেন, তাকে হেদায়েত দান করেন, তাকে সুস্থ রাখেন এবং তাকে রিজিক দান করেন।
এই দোয়াটি পড়ার সময় বান্দা আল্লাহর কাছে তার সকল চাওয়া-পাওয়ার কথা বলতে পারে।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ অর্থ হলো, “আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, মুহাম্মদ হলেন তার প্রেরিত রাসূল।” এটি ইসলামের মূল বিশ্বাসের ঘোষণা।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অর্থ হলো, “আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।” এই ঘোষণার মাধ্যমে মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে, আল্লাহই একমাত্র সত্য মাবুদ এবং তিনিই একমাত্র উপাস্য।
মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ অর্থ হলো, “মুহাম্মদ হলেন তার প্রেরিত রাসূল।” এই ঘোষণার মাধ্যমে মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে, মুহাম্মদ (সা.) হলেন আল্লাহর প্রেরিত রাসূল এবং তিনিই ইসলামের প্রবর্তক।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ ঘোষণাটি ইসলামের মূল বিশ্বাসের ঘোষণা। এটি মুসলমানদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা। এই ঘোষণার মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর একত্ব ও মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুওয়াতের প্রতি ঈমান প্রকাশ করে।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ ঘোষণাটি মুসলমানদের জন্য অনেক ফজিলতপূর্ণ। এই ঘোষণাটি পাঠ করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হয়। এই ঘোষণাটি পাঠ করলে বান্দার গুনাহ মাফ হয়। এই ঘোষণাটি পাঠ করলে বান্দা জান্নাতে প্রবেশের সৌভাগ্য অর্জন করে।
আসরের নামাজ কয় রাকাত
আসরের নামাজ চার রাকাত। এর মধ্যে চার রাকাত ফরজ এবং চার রাকাত সুন্নত। ফরজ অংশ ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করা হয়। তবে ব্যক্তি মুসাফির অবস্থায় থাকলে চার রাকাত ফরজকে সংক্ষিপ্ত করে দুই রাকাত করতে পারেন।
আসরের নামাজের সময় হলো সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ার পর থেকে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত।
ফজরের নামাজ কয় রাকাত
ফজরের নামাজ দুই রাকাত। এর মধ্যে দুই রাকাত ফরজ এবং দুই রাকাত সুন্নত। ফরজ অংশ ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করা হয়। তবে ব্যক্তি মুসাফির অবস্থায় থাকলে দুই রাকাত ফরজকে সংক্ষিপ্ত করে এক রাকাত করতে পারেন।
ফজরের নামাজের সময় হলো সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত।
ফজরের নামাজের নিয়ম
ফজরের নামাজের নিয়ম
ফজরের নামাজ দুই রাকাত সুন্নত ও দুই রাকাত ফরজ নামাজ নিয়ে গঠিত। ফরজ অংশ ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করা হয়। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত ফজরের নামাজের সময়। ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজের পর ফরজ নামাজ পরতে হয়।
ফজরের নামাজের নিয়ম নিম্নরূপ:
সুন্নত নামাজের নিয়ম
-
- নিয়ত: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাআতায় সুন্নাতি ফজরি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।
-
- তাকবীরে তাহরীমা: আল্লাহু আকবার বলে হাত বাঁধতে হবে।
-
- ছানা: ছানা পড়তে হবে।
-
- আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম: আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম পড়ে হাতের তালু দিয়ে মুখমণ্ডল, ডান কাঁধ ও বাম কাঁধ মুছে নিতে হবে।
-
- বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম: বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম পড়ে সূরা ফাতেহা পড়তে হবে।
-
- **সূরা ফাতেহার পর অন্য যেকোনো সূরা বা কয়েকটি আয়াত পড়তে হবে।
-
- রুকু: রুকু করতে হবে।
-
- **রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে।
-
- সাজদা: দুই সাজদা করতে হবে।
-
- সাজদার মধ্যবর্তী বৈঠক: দুই সাজদার মধ্যে বসে তাশাহুদ পড়তে হবে।
-
- **দ্বিতীয় রাকাতেও প্রথম রাকাতের মতোই পড়তে হবে।
-
- **সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।
ফরজ নামাজের নিয়ম
-
- নিয়ত: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবাআ রাকয়াতি ফারজি ফজরি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।
-
- তাকবীরে তাহরীমা: আল্লাহু আকবার বলে হাত বাঁধতে হবে।
-
- ছানা: ছানা পড়তে হবে।
-
- আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম: আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম পড়ে হাতের তালু দিয়ে মুখমণ্ডল, ডান কাঁধ ও বাম কাঁধ মুছে নিতে হবে।
-
- বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম: বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম পড়ে সূরা ফাতেহা পড়তে হবে।
-
- **সূরা ফাতেহার পর অন্য যেকোনো সূরা বা কয়েকটি আয়াত পড়তে হবে।
-
- রুকু: রুকু করতে হবে।
-
- **রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে।
-
- সাজদা: দুই সাজদা করতে হবে।
-
- সাজদার মধ্যবর্তী বৈঠক: দুই সাজদার মধ্যে বসে তাশাহুদ পড়তে হবে।
-
- **তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতেহার পর শুধুমাত্র সূরা ইখলাস পড়তে হবে।
-
- রুকু: রুকু করতে হবে।
-
- **রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে।
-
- সাজদা: দুই সাজদা করতে হবে।
-
- সাজদার মধ্যবর্তী বৈঠক: দুই সাজদার মধ্যে বসে তাশাহুদ, দুরুদ শরীফ ও দোয়া মাসূরা পড়তে হবে।
-
- **সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।
ফজরের নামাজের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
-
- ফজরের নামাজের সময় হলো সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত।
- ফজরের নামাজের ফরজ অংশ ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে আদায় করা উত্তম।
উপসংহার
আমি আশা করছি আপনারা আপনাদের __ এই প্রশ্নের উওর পেয়েছেন। আরো কিছু জানার থাকলে নিচে কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
আরও পড়ুনঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
–