তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলেই খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

তাহাজ্জুদ নামাজ হলো ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ নফল নামাজ। এ নামাজের আরবি নাম হলো সালাতুল লাইল। তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম নিম্নরূপ:

নিয়ত

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত মনে মনে করতে হয়। নিয়তের বিষয়বস্তু হলো,

নিয়ত করছি দুই রাকাআত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার, আল্লাহর ওয়াস্তে।

কিয়াম

নিয়ত করে উঠে তাকবীরে তাহরীমা বলে দুই হাত কাধ বরাবর উঠিয়ে এভাবে বলতে হয়,

আল্লাহু আকবার।

এরপর ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে হাতের তালু নাভির নীচে রাখতে হয়।

সুরা ফাতিহা পড়া

তাকবীরে তাহরীমার পর সুরা ফাতিহা পড়তে হয়। সুরা ফাতিহা পড়ার পর অন্য যেকোনো সুরা বা আয়াত পড়া যায়।

রুকু ও সেজদা

সুরা ফাতিহা ও অন্য যেকোনো সুরা বা আয়াত পড়ার পর রুকু করতে হয়। রুকুতে তিনবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” পড়তে হয়। রুকু থেকে উঠে “সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলে দাঁড়াতে হয়। এরপর “রাব্বানা লাকাল হামদ” বলে দুই হাত বুকের উপর রেখে সেজদা করতে হয়। সেজদায় তিনবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” পড়তে হয়। সেজদা থেকে উঠে “আল্লাহু আকবার” বলে বসতে হয়। বসেও তিনবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” পড়তে হয়। এরপর “আল্লাহু আকবার” বলে আবার সেজদা করতে হয়। এইভাবে দুই রাকাআত শেষ হয়।

সালাম ফিরানো

দ্বিতীয় রাকাআতের সেজদার পর “আল্লাহু আকবার” বলে উঠে বসে “আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াসসালাওয়াতু ওয়াত্তায়েবাতু। আসসালামু আলাইকা আইয়ুহান নাবিয়্যু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসুলুহু।” পড়তে হয়। এরপর “আল্লাহু আকবার” বলে ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে আরও “আল্লাহু আকবার” বলে বাম দিকে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হয়।তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাআতের সংখ্যা

তাহাজ্জুদ নামাজ দুই থেকে ১২ রাকাআত পর্যন্ত পড়া যায়। তবে রাসূলুল্লাহ (সা.) ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন। তাই ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া উত্তম।

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

ইশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদেকের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যায়। তবে অর্ধ রাতের পর থেকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ভালো। শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা সর্বোত্তম।

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

তাহাজ্জুদ নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে। এর মধ্যে কিছু ফজিলত হলো:

  • তাহাজ্জুদ নামাজ জান্নাতের পথ সহজ করে দেয়।
  • তাহাজ্জুদ নামাজ রিজিক বৃদ্ধি করে।
  • তাহাজ্জুদ নামাজ গুনাহ মাফ করে দেয়।
  • তাহাজ্জুদ নামাজ দোয়া কবুল করে।

তাই সকল মুসলমানের উচিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা।

তাহাজ্জুদ নামাজের কোন সূরা পড়তে হবে?

তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সূরা পড়া লাগে না। আপনি যে কোনো সূরা দিয়েই পড়তে পারবেন। তবে, তাহাজ্জুদ নামাজে সুরা ফাতিহা ছাড়াও অন্য যেকোনো সুরা বা আয়াত পড়া উত্তম।

রাসূলুল্লাহ (সা.) তাহাজ্জুদ নামাজে বিভিন্ন সূরা পড়তেন। তিনি কখনো কখনো একটি সূরা বারবার পড়তেন, আবার কখনো কখনো বিভিন্ন সূরা পড়তেন।

তাহাজ্জুদ নামাজে পড়ার জন্য কিছু সহজ ও ছোট সূরা হলো:

  • সূরা আল-ফাতিহা
  • সূরা আল-ইখলাস
  • সূরা আল-ফালাক
  • সূরা আন-নাস
  • সূরা আত-তাওবাহ
  • সূরা আল-বাকারাহ
  • সূরা আল-আমরাত
  • সূরা আল-ইমরান
  • সূরা আন-নিসা

এছাড়াও, আপনি নিজের পছন্দের যেকোনো সূরা বা আয়াত পড়তে পারেন।

তাহাজ্জুদ নামাজের প্রতি রাকাআতে সুরা ফাতিহা পড়ার পর আপনি যেকোনো সূরা বা আয়াত পড়তে পারেন। তবে, প্রতি রাকাআতে একই সূরা পড়ার চেয়ে বিভিন্ন সূরা পড়া উত্তম। কারণ, বিভিন্ন সূরা পড়ার মাধ্যমে আপনার নামাজের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি কোরআনের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে চাইলে কি পাওয়া যায়?

Leave a Comment