ছয় দফা মনে রাখার কৌশল
ছয় দফা মনে রাখার জন্য অনেক কৌশল রয়েছে। এখানে কয়েকটি কৌশল দেওয়া হল:
- ছয় দফার প্রতিটি দফার প্রথম অক্ষর দিয়ে একটি শব্দ গঠন করা যেতে পারে। যেমন:
- স্বায়ত্তশাসন = স্বা
- সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ = সক
- আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন = আ
- দুই ভাষার সমতা = দু
- কৃষকদের ন্যায্য অধিকার = ক
- নিষ্পত্তি = নি
এই শব্দগুলি মনে রাখা সহজ। উদাহরণস্বরূপ, “স্বাধীনতা” শব্দের প্রথম অক্ষর “স্ব” দিয়ে “স্ব”-য়ত্তশাসন মনে রাখা যেতে পারে।
- ছয় দফার প্রতিটি দফার একটি ছবি মনে করা যেতে পারে। যেমন:
- স্বায়ত্তশাসন = একটি দেশের মানচিত্র
- সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ = একটি সমতাচিহ্ন
- আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন = একটি বিভাগের মানচিত্র
- দুই ভাষার সমতা = একটি বাংলা ও ইংরেজি ভাষার লেখা
- কৃষকদের ন্যায্য অধিকার = একটি কৃষকের ছবি
- নিষ্পত্তি = একটি মীমাংসা
এই ছবিগুলি মনে রাখা সহজ। উদাহরণস্বরূপ, স্বায়ত্তশাসন মনে রাখার জন্য একটি দেশের মানচিত্র মনে করা যেতে পারে।
- ছয় দফার প্রতিটি দফার একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ মনে করা যেতে পারে। যেমন:
- স্বায়ত্তশাসন = স্বাধীনতা
- সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ = বৈষম্যহীনতা
- আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন = আঞ্চলিক স্বাধীনতা
- দুই ভাষার সমতা = দ্বিভাষিকতা
- কৃষকদের ন্যায্য অধিকার = ন্যায্য অধিকার
- নিষ্পত্তি = মীমাংসা
এই সংস্করণগুলি মনে রাখা সহজ। উদাহরণস্বরূপ, স্বায়ত্তশাসন মনে রাখার জন্য “স্বাধীনতা” মনে করা যেতে পারে।
- ছয় দফার প্রতিটি দফার একটি গান বা কবিতা রচনা করা যেতে পারে। এই গান বা কবিতা নিয়মিত গাওয়া বা পড়া যেতে পারে। এতে ছয় দফা মনে রাখা সহজ হবে।
আপনার জন্য কোন কৌশলটি সবচেয়ে কার্যকর হবে তা নির্ভর করবে আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ এবং শেখার ধরনগুলির উপর। বিভিন্ন কৌশল চেষ্টা করে দেখুন এবং আপনার জন্য সবচেয়ে ভালোটি খুঁজে বের করুন।
ছয় দফা সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. ছয় দফার মূল বিষয়বস্তু কী ছিল?
উত্তর: ছয় দফার মূল বিষয়বস্তু ছিল পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন। এটি ছিল একটি পূর্ণ স্বাধীনতার আন্দোলন।
২. ছয় দফার দাবিগুলো কী ছিল?
উত্তর: ছয় দফার দাবিগুলো ছিল নিম্নরূপ:
- পূর্ব পাকিস্তানকে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে গঠন করা।
- সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ করা।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক নির্বাচন কমিশন গঠন করা।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক আঞ্চলিক সরকার গঠন করা।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য দুই ভাষার সমতা স্বীকৃতি দেওয়া।
- পূর্ব পাকিস্তানের কৃষকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা।
৩. ছয় দফার গুরুত্ব কী ছিল?
উত্তর: ছয় দফার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এটি ছিল বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আন্দোলনের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ছয় দফার দাবিগুলো বাঙালি জাতির স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ছিল।
ছয় দফার দাবিগুলোকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতির মধ্যে স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার চেতনা বৃদ্ধি পায়। এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয়ের ভিত্তি রচনা করে।
৪. ছয় দফার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে কী পরিবর্তন আসে?
উত্তর: ছয় দফার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ছয় দফার দাবিগুলোকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতির মধ্যে স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার চেতনা বৃদ্ধি পায়। এতে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
ছয় দফার দাবিগুলোকে কেন্দ্র করে পূর্ব পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদার হয়। এতে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের উপর তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে ব্যর্থ হয়।
৫. ছয় দফার দাবিগুলো পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী কীভাবে গ্রহণ করে?
উত্তর: ছয় দফার দাবিগুলো পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী প্রত্যাখ্যান করে। তারা পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।
ছয় দফার দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করায় পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতির মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়। এতে পূর্ব পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলন আরও জোরদার হয়।
ছয় দফার দাবিগুলো পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর সাথে বাঙালি জাতির মধ্যে দ্বন্দ্বের সূচনা করে। এ দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে।
৬ দফা আন্দোলন pdf
ভূমিকা
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্যের শিকার হতে থাকে। এই বৈষম্য দূর করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিভিন্ন আন্দোলন গড়ে তোলে। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ছয় দফা দাবি ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। ছয় দফা দাবিকে কেন্দ্র করে পূর্ব পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদার হয়।
ছয় দফার দাবিসমূহ
ছয় দফার দাবিসমূহ ছিল নিম্নরূপ:
- পূর্ব পাকিস্তানকে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে গঠন করা।
- সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ করা।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক নির্বাচন কমিশন গঠন করা।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক আঞ্চলিক সরকার গঠন করা।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য দুই ভাষার সমতা স্বীকৃতি দেওয়া।
- পূর্ব পাকিস্তানের কৃষকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা।
ছয় দফা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে পরিবর্তন
ছয় দফা আন্দোলনের ফলে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ছয় দফার দাবিগুলোকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতির মধ্যে স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার চেতনা বৃদ্ধি পায়। এতে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
ছয় দফা আন্দোলনের ফলে পূর্ব পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদার হয়। এতে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের উপর তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে ব্যর্থ হয়।
ছয় দফা আন্দোলনের গুরুত্ব
ছয় দফা আন্দোলনের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এটি ছিল বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আন্দোলনের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ছয় দফার দাবিগুলো বাঙালি জাতির স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ছিল।
ছয় দফার দাবিগুলোকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতির মধ্যে স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার চেতনা বৃদ্ধি পায়। এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয়ের ভিত্তি রচনা করে।
ছয় দফা আন্দোলনের ফলাফল
ছয় দফা আন্দোলনের ফলে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের উপর তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে ব্যর্থ হয়। এতে পূর্ব পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদার হয়।
ছয় দফা আন্দোলন বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আন্দোলনের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল। ছয় দফার দাবিগুলো বাঙালি জাতির স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ছিল।
ছয় দফা আন্দোলনের ফলে বাঙালি জাতির মধ্যে স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার চেতনা বৃদ্ধি পায়। এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয়ের ভিত্তি রচনা করে।
১৯৬৬ সালের ৬ দফা কর্মসূচি ব্যাখ্যা কর
১৯৬৬ সালের ৭ জুন লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলগুলোর সম্মেলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার দাবিকে প্রতিফলিত করে ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ছয় দফা কর্মসূচির দাবিসমূহ ছিল নিম্নরূপ:
১. পূর্ব পাকিস্তানকে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে গঠন করা।
এই দফার দাবি অনুসারে, পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তানের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে গঠন করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়। অন্য সব বিষয়ে পূর্ব পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্যকে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হবে।
২. সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ করা।
এই দফার দাবি অনুসারে, পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে:
- পূর্ব পাকিস্তানে পৃথক নির্বাচন কমিশন গঠন।
- পূর্ব পাকিস্তানে পৃথক আঞ্চলিক সরকার গঠন।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য দুই ভাষার সমতা স্বীকৃতি দেওয়া।
- পূর্ব পাকিস্তানের কৃষকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা।
৩. পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক নির্বাচন কমিশন গঠন করা।
এই দফার দাবি অনুসারে, পূর্ব পাকিস্তানে পৃথক নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এটি পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের জন্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করবে।
৪. পূর্ব পাকিস্তানের জন্য পৃথক আঞ্চলিক সরকার গঠন করা।
এই দফার দাবি অনুসারে, পূর্ব পাকিস্তানে পৃথক আঞ্চলিক সরকার গঠন করতে হবে। এটি পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের জন্য তাদের নিজস্ব বিষয়গুলি পরিচালনা করার অধিকার নিশ্চিত করবে।
৫. পূর্ব পাকিস্তানের জন্য দুই ভাষার সমতা স্বীকৃতি দেওয়া।
এই দফার দাবি অনুসারে, পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে হবে। এটি পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের জন্য তাদের মাতৃভাষার অধিকার নিশ্চিত করবে।
৬. পূর্ব পাকিস্তানের কৃষকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা।
এই দফার দাবি অনুসারে, পূর্ব পাকিস্তানের কৃষকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে:
- জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত করা।
- কৃষকদের জন্য ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা।
- কৃষকদের জন্য কৃষিঋণ সুবিধা প্রদান করা।
ছয় দফা কর্মসূচি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার দাবির একটি বলিষ্ঠ ঘোষণা ছিল। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পূর্ব পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদার হয়। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাফল্য লাভ করে। ছয় দফা কর্মসূচি বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আন্দোলনের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল। এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয়ের ভিত্তি রচনা করে।
ছয় দফা আন্দোলন কেন হয়েছিল
ছয় দফা আন্দোলন হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার দাবিকে প্রতিফলিত করার জন্য। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্যের শিকার হতে থাকে। এই বৈষম্য দূর করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিভিন্ন আন্দোলন গড়ে তোলে।
ছয় দফা আন্দোলনের প্রধান কারণগুলি ছিল:
- রাজনৈতিক বৈষম্য: পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬%, কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব ছিল পাকিস্তান সরকারে মাত্র ৩০%।
- অর্থনৈতিক বৈষম্য: পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতির প্রধান অংশ ছিল কৃষিকাজ, কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের কৃষকরা পাকিস্তানের মোট কৃষিপণ্যের মাত্র ১৫% উৎপাদন করত।
- সাংস্কৃতিক বৈষম্য: পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান ভাষা ছিল বাংলা, কিন্তু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ছিল উর্দু।
এই বৈষম্য দূর করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার চেতনা বৃদ্ধি পায়। এই চেতনার প্রতিফলন ঘটেছিল ছয় দফা কর্মসূচিতে।
ছয় দফা কর্মসূচির দাবিগুলি ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার দাবির একটি বলিষ্ঠ ঘোষণা। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পূর্ব পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদার হয়। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাফল্য লাভ করে।
ছয় দফা আন্দোলন বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আন্দোলনের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল। এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয়ের ভিত্তি রচনা করে।
ছয় দফা কোথায় এবং কত সালে ঘোষিত হয়
ছয় দফা কর্মসূচি ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন।
ছয় দফা কর্মসূচির মূল বক্তব্য ছিল পাকিস্তানের একটি ফেডারেল রাষ্ট্র গঠন, যার প্রতিটি অঙ্গরাজ্যকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। ছয় দফার মূল দাবিগুলি ছিল:
- পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য দুটি পৃথক সংবিধান।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য দুটি পৃথক রাষ্ট্রভাষা – বাংলা ও উর্দু।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য আলাদা মুদ্রা।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য আলাদা আয়কর ব্যবস্থা।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য আলাদা বিচার বিভাগ।
- পূর্ব পাকিস্তানের জন্য নিজস্ব প্রতিরক্ষা বাহিনী।
ছয় দফা কর্মসূচি পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ছয় দফার দাবিতে পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতাল সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে ব্যাপক গণআন্দোলনের সূচনা করে। এই আন্দোলন ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাফল্য লাভ করে।
ছয় দফা কর্মসূচি বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আন্দোলনের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল। এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয়ের ভিত্তি রচনা করে।
৬ দফার প্রথম দফা কি ছিল
ছয় দফার প্রথম দফা ছিল পূর্ব পাকিস্তানকে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে গঠন করা। এই দফার দাবি অনুসারে, পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তানের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে গঠন করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকবে শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়। অন্য সব বিষয়ে পূর্ব পাকিস্তানের অঙ্গরাজ্যকে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হবে।
এই দফার মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার দাবিকে প্রতিফলিত করা হয়েছিল। এই দফার দাবি পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে। কিন্তু এই দফার দাবিকে কেন্দ্র করে পূর্ব পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদার হয়।
ছয় দফার প্রথম দফার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এটি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বায়ত্তশাসন ও পূর্ণ স্বাধীনতার দাবির একটি বলিষ্ঠ ঘোষণা ছিল। এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতির বিজয়ের ভিত্তি রচনা করে।
আরো পড়ুনঃ পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য কত মিটার