হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলেই খুব ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বলবো। তো চলুন শুরু করা যাক।
‘শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
শবে বরাতের নামাজ আদায়ের নিয়ম সাধারণ নামাজের মতোই। তবে, শবে বরাতের নামাজের কিছু বিশেষ নিয়ম রয়েছে।
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
- নিয়ত:
নিয়ত করছি আল্লাহর পক্ষ থেকে লাইলাতুল বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ার।
- কিয়াম:
সালাতের শুরুতে তাকবীরে তাহরীমা পড়ার পর সূরা ফাতিহা পড়ার পর যেকোনো একটি সুরা পড়ে কিয়াম করা।
- রুকু:
সূরা পড়া শেষে রুকু করা। রুকুতে তিনবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম” পড়া।
- সিজদা:
রুকু থেকে উঠে দাঁড়ানোর পর সিজদা করা। সিজদায় তিনবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” পড়া।
- দু’টি সিজদার মাঝখানে বসা:
দুই সিজদার মাঝখানে বসে “রাব্বানা লাকাল হামদ” পড়া।
-
দ্বিতীয় রাকাতেও একইভাবে নামাজ আদায় করা।
-
সালাম ফিরান:
সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করা।
শবে বরাতের নামাজের বিশেষ আমল
-
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, “শাবানের ১৫ তারিখে নফল নামাজ পড়া উত্তম।”
-
হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) বলেন, “শাবানের ১৫ তারিখে নফল নামাজ, ইতিকাফ, দান-সদকা, দোয়া-ইস্তেগফার ইত্যাদি আমল করা উত্তম।”
-
ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী (রহ.) বলেন, “শাবানের ১৫ তারিখে নফল নামাজ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে।”
শবে বরাতের নামাজের দোয়া
শবে বরাতের নামাজের শেষে নিম্নলিখিত দোয়া পড়া যেতে পারে:
اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফুআন্নি
অর্থ:
হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল ও ক্ষমা করতে ভালোবাসো। অতএব, আমাকে ক্ষমা করো।
এছাড়াও, শবে বরাতের নামাজের সময় যেকোনো দোয়া পড়া যায়।
সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম
সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম
সালাতুত তাসবিহ নামাজ হলো একটি নফল নামাজ। এ নামাজের প্রতি রাকাআতে ৭৫ বার একটি নির্দিষ্ট তাসবিহ পড়া হয়। এই তাসবিহটি হলো:
سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلهِ وَلَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَرُ
সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার
অর্থ:
মহাপবিত্র আল্লাহ, সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, আল্লাহ মহান।
সালাতুত তাসবিহ নামাজ একাকী পড়া হয়, জামাতে পড়া হয় না। এ নামাজ যেকোনো সময় পড়া যায়, তবে সম্ভব হলে জুমার রাতে পড়া উত্তম।
সালাতুত তাসবিহ নামাজের পদ্ধতি
সালাতুত তাসবিহ নামাজ চার রাকাআত। প্রতি রাকাআতে সুরা ফাতেহা ও যেকোনো একটি সুরা পড়তে হয়। নামাজের নিয়ম অন্যান্য নফল নামাজের মতোই। তবে, প্রতি রাকাআতে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে তাসবিহ পড়তে হয়।
সালাতুত তাসবিহ নামাজের তাসবিহ পড়ার স্থান
- নামাজের শুরুতে দাঁড়িয়ে সুরা ফাতেহা পড়ার আগে ১৫ বার।
- সুরা ফাতেহা ও অন্য সুরা পড়ার পর রুকু করার আগে ১০ বার।
- রুকুতে রুকুর তাসবিহ পড়ার পর ১০ বার।
- রুকু থেকে দাঁড়ানোর পর ১০ বার।
- প্রথম সেজদার পর সেজদার তাসবিহ পড়ার পর ১০ বার।
- প্রথম সেজদা থেকে মাথা উঠে বসবার পর ১০ বার।
- দ্বিতীয় সেজদার পর সেজদার তাসবিহ পড়ার পর ১০ বার।
- দ্বিতীয় সেজদা থেকে মাথা উঠে তাশাহুদ পড়ার আগে ১০ বার।
সালাতুত তাসবিহ নামাজের ফজিলত
সালাতুত তাসবিহ নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- এ নামাজ পড়লে আল্লাহ তা’আলা বান্দার সকল গুনাহ মাফ করে দেন।
- এ নামাজ পড়লে বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
- এ নামাজ পড়লে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে।
সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ত
সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা বা মনে মনে করা যায়। মুখে উচ্চারণ করলে আরবিতে নিয়ত করা উত্তম। বাংলায়ও নিয়ত করা যাবে।
সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ত
নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা আরবাআ রাকয়াতি সালাতুত তাসবিহি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।
অর্থ:
আমি আল্লাহর দরবারে নিয়ত করছি, যে আমি আল্লাহর জন্য চার রাকাআত সালাতুত তাসবিহ নামাজ আদায় করছি, কেবলার দিকে মুখ করে। আল্লাহু আকবার।
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম
সালাতুল হাজত নামাজ হলো একটি নফল নামাজ। এ নামাজের মাধ্যমে কোনও বৈধ চাওয়া-পাওয়া পূরণের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা হয়।
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম
সালাতুল হাজত নামাজ দুই রাকাআত। প্রতি রাকাআতে সুরা ফাতেহা ও যেকোনো একটি সুরা পড়তে হয়। নামাজের নিয়ম অন্যান্য নফল নামাজের মতোই। তবে, সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ত আলাদা।
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ত
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা বা মনে মনে করা যায়। মুখে উচ্চারণ করলে আরবিতে নিয়ত করা উত্তম। বাংলায়ও নিয়ত করা যাবে।
সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ত
নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকাআতাই সালাতুল হাজতি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।
অর্থ:
আমি আল্লাহর দরবারে নিয়ত করছি, যে আমি আল্লাহর জন্য দুই রাকাআত সালাতুল হাজত নামাজ আদায় করছি, কেবলার দিকে মুখ করে। আল্লাহু আকবার।
সালাতুল হাজত নামাজের পদ্ধতি
সালাতুল হাজত নামাজের পদ্ধতি অন্যান্য নফল নামাজের মতোই। তবে, সালাতুল হাজত নামাজের শেষে একটি বিশেষ দোয়া পড়া হয়। এই দোয়াটি হলো:
اَللَّهُمَّ اِنِّى اَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা ওয়াততুকা ওয়াল আফাফা ওয়াল গিন্না
অর্থ:
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে হিদায়াত, তাকওয়া, পবিত্রতা এবং সম্পদ প্রার্থনা করছি।
সালাতুল হাজত নামাজ যেকোনো সময় পড়া যায়। তবে, নির্দিষ্টভাবে জুমার রাতে পড়া উত্তম।
সালাতুল হাজত নামাজের ফজিলত
সালাতুল হাজত নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- এ নামাজ পড়লে আল্লাহ তা’আলা বান্দার হাজত পূরণ করেন।
- এ নামাজ পড়লে বান্দার গুনাহ মাফ হয়।
- এ নামাজ পড়লে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে।
সালাতুল হাজত নামাজের সতর্কতা
সালাতুল হাজত নামাজের কিছু সতর্কতা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- নামাজের নিয়ত ও পদ্ধতি ঠিকভাবে জানা থাকা উচিত।
- নামাজের সময় মনোযোগ সহকারে দোয়া করা উচিত।
- নামাজের পর আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখা উচিত।
হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল
হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল অর্থ হলো, “আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক।” এই দোয়াটি কোরআনের সূরা আলে ইমরানের ১৭৩ নম্বর আয়াতে উল্লেখিত হয়েছে।
এই দোয়াটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ দোয়া। এই দোয়াটি পড়লে আল্লাহ তা’আলা বান্দার সকল বিপদ-আপদ থেকে তাকে রক্ষা করেন এবং বান্দার সকল কাজের জন্য সাহায্য করেন।
এই দোয়াটি যেকোনো সময় পড়া যায়। তবে, বিশেষ করে বিপদ-আপদের সময় এই দোয়াটি পড়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই দোয়াটি পড়ার ফলে বান্দা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখতে পারে এবং আল্লাহর সাহায্য লাভ করতে পারে।
এই দোয়াটি পড়ার কিছু উপকারিতা হলো:
- এই দোয়া পড়লে আল্লাহ তা’আলা বান্দার সকল বিপদ-আপদ থেকে তাকে রক্ষা করেন।
- এই দোয়া পড়লে আল্লাহ তা’আলা বান্দার সকল কাজের জন্য সাহায্য করেন।
- এই দোয়া পড়লে বান্দা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখতে পারে।
- এই দোয়া পড়লে বান্দার ইমান বৃদ্ধি পায়।
তাই, আমাদের উচিত এই দোয়াটি বেশি বেশি পড়া এবং এর অর্থ ও ফজিলত সম্পর্কে জানা।
জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা
জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা
- জুম্মা মোবারক। হে আল্লাহ! আমাদের সকলকে জুম্মার দিনের ফজিলত দান করুন।
- জুম্মা মোবারক। হে আল্লাহ! আমাদের সকলকে সত্যের পথে চলার তাওফিক দান করুন।
- জুম্মা মোবারক। হে আল্লাহ! আমাদের সকলকে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা দান করুন।
কিছু কবিতা
- **জুম্মা মোবারক,
আজকের দিনটি শুভ হোক,
আমাদের সকলের জীবনে,
আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।**
- **জুম্মা মোবারক,
আজকের দিনটি হোক,
আমাদের সকলের জন্য,
সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির দিন।**
- **জুম্মা মোবারক,
আজকের দিনটি হোক,
আমাদের সকলের জন্য,
ইবাদত ও বরকতের দিন।**
কিছু উক্তি
- জুম্মা মোবারক। হে আল্লাহ! আমাদের সকলকে জুম্মার দিনের ফজিলত বুঝতে এবং তা অর্জনের তাওফিক দান করুন।
- জুম্মা মোবারক। হে আল্লাহ! আমাদের সকলকে জুম্মার দিনের খুতবা শ্রবণ ও তা অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন।
- জুম্মা মোবারক। হে আল্লাহ! আমাদের সকলকে জুম্মার দিনের জামাতে শরীক হওয়ার তাওফিক দান করুন।
উপসংহার
আরও পড়ুনঃ মাগরিবের নামাজের সময়